সঙ্গতি ও দায়শোধ
সঙ্গতি ও দায়শোধের উদ্দেশ্য
- ঋণদাতার সম্মতিক্রমে কোন ঋণগ্রহীতা যদি প্রকৃতপক্ষে যা প্রত্যাশা করা হয়েছিলো তার পরিবর্তে ভিন্ন ধরনের কোন কাজ করে থাকেন, ওই কাজটিকে বৈধ কাজ বলে বিবেচনা করা হবে। (দেওয়ানি আইনের ধারা 466)
· উদাহরণস্বরূপ, 5,000,000 কেআরডব্লিউ নিয়েছেন এমন কোন ঋণগ্রহীতা ঋণদাতার সম্মতিক্রমে ওই ঋণের পরিবর্তে ঋণদাতাকে একটি হীরার আংটি দিতে পারেন।
সঙ্গতি ও দায়শোধের জন্য আবশ্যকতা
- সঙ্গতি ও দায়শোধের ব্যাপারে পক্ষগুলোর মধ্যে একটি চুক্তি হতে হবে।
- সেখানে একটি ঋণের অস্তিত্ব থাকতে হবে।
- বিকল্প কাজটি আসলেই প্রত্যাশিত কিনা সে বিষয়ে পক্ষগুলোর মধ্যে একটি চুক্তি থাকতে হবে।
· প্রকৃতপক্ষে যা প্রত্যাশা করা হচ্ছে বিকল্প বস্তুটির আর্থিক মূল্যমান একই রকম নাও হতে পারে।
· সে অনুযায়ী, ওই 5,000,000 কেআরডব্লিউ ঋণগ্রহীতা সঙ্গতি ও দায়শোধ অনুযায়ী ঋণদাতাকে 4,000,000 কেআরডব্লিউ মূল্যমানের একটি হীরার আংটি দিতে পারেন।
- সঙ্গতি ও দায়শোধের কোন কাজ মূলত ঋণগ্রহীতাই করে থাকেন।
সঙ্গতি ও দায়শোধের কার্যকারিতা
- ঋণগ্রহীতা সঙ্গতি ও দায়শোধের কোন কাজ করলে ওই কাজের কার্যকারিতা ঋণ পরিশোধের মতো একই হবে।(দেওয়ানি আইনের ধারা 466)
- ফলে, এরপর থেকে ঋণ বাধ্যবাধকাতার অবসান ঘটবে।
পাল্টা-দাবি
পাল্টা-দাবির উদ্দেশ্য
- ঋণ বাধ্যবাধকতায় আবদ্ধ দুই ব্যক্তি’র একই ধরনের বিষয় থাকলে পাল্টা-দাবি উত্থাপিত হতে পারে। পাল্টা-দাবি উত্থাপন করা হলে একই সঙ্গে তার বাধ্যবাধকতা-সংশ্লিষ্ট পরিমাণের অর্থ পরিশোধ করতে হবে।
· উদাহরণ, কেউ যদি কোন ঋণদাতার কাছ থেকে 1,000,000 কেআরডব্লিউ ঋণ নেয়, কিন্তু ওই ঋণদাতা ইতোমধ্যে ওই ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে 500,000 কেআরডব্লিউ পাওনা আছেন, তাহলে ওই ঋণগ্রহীতা যদি কোন পাল্টা-দাবি ঘোষণা করেন তাহলে তাকে ওই 500,000 কেআরডব্লি’র ঋণের বাধ্যবাধকতা প্রতিপালন করতে হতে পারে।
পাল্টা-দাবির আবশ্যকতা
- দুই ব্যক্তি যদি পরস্পরের সঙ্গে ঋণ বাধ্যবাধকাতায় আবদ্ধ থাকেন, যাদের বিষয় একই ধরনের এবং দুটিই বকেয়া হয়েছে, প্রত্যেক দায়বদ্ধ ব্যক্তি তার বাধ্যবাধকতা সংশ্লিষ্ট পরিমাণের অর্থ পর্যন্ত কোন পাল্টা-দাবি করতে পারেন: উল্লেখ্য বাধ্যবাধকতার প্রকৃতি অনুমোদন না করলে এটা প্রয়োগ করা যাবে না। (দেওয়ানি আইনের ধারা 492-(1))
- কোন পক্ষ যদি বিপরীতধর্মী কোন ইচ্ছা ব্যক্ত করেন, সেই ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন পাল্টা-দাবি করা যাবে না। আবার, সরল বিশ্বাসে কাজ করছে এমন কোন তৃতীয় পক্ষের বিরুদ্ধে ওই ধরনের ইচ্ছা প্রকাশ যাবে না। (দেওয়ানি আইনের ধারা 492-(2))
পাল্টা-দাবির পদ্ধতি
- অন্যপক্ষের ইচ্ছা ঘোষণার মাধ্যমে পাল্টা-দাবি কার্যকর হতে পারে। এই ইচ্ছার সঙ্গে কোন শর্ত যুক্ত বা কোন সময়সীমা বেধে দেয়া নাও থাকতে পারে। (দেওয়ানি আইনের ধারা 493-1)
- সময় বেধে দেয়া আছে এমন ঘটনার ক্ষেত্রে, যেখানে বেধে দেয়া সময়ের মধ্যে পাল্টা-দাবি করা হয়েছে, এ ধরনের দাবির ক্ষেত্রে ঋণদাতাও পাল্টা-দাবি করতে পারেন। (দেওয়ানি আইনের ধারা 495)
পাল্টা-দাবি নিষিদ্ধ
- ইচ্ছাকৃত অবৈধ কাজের মাধ্যমে কোন ঋণ বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি হলে, ঋণদাতার পাল্টা-দাবি পূরণে ঋণগ্রহীতা সহায়তা করবেন না। (দেওয়ানি আইনের ধারা 496)
- দাবিটি যদি এমন হয় যে এর কোন সংযুক্তি কার্যকর করা যাবে না, তাহলে ঋণগ্রহীতা পাল্টা-দাবির ক্ষেত্রে আত্মরক্ষার জন্য ঋণদাতার বিরুদ্ধে নাও দাঁড়াতে পারেন। (দেওয়ানি আইনের ধারা 497)
- কোন গার্নিশমেন্ট আদেশের আওতায় তৃতীয় কোন দায়বদ্ধ পক্ষ পাল্টা-দাবির ক্ষেত্রে কোন অবলাইজি’র বিরুদ্ধে আত্মপক্ষ সমর্থন নাও করেতে পারেন। (দেওয়ানি আইনের ধারা 498)
পাল্টা-দাবির কার্যকারিতা
- যখন প্রতিটি বাধ্যবাধকতা একটি পাল্টা-দাবি‘র যোগ্য তখন কোন পাল্টা-দাবি উত্থাপনের ইচ্ছা ঘোষণা করা হলে ওই পরিমাণ অর্থের জন্য ঋণ বাধ্যবাধকতার অবসান ঘটেছে বলে মনে করা হবে। (দেওয়ানি আইনের ধারা 493-2)
নবপ্রবর্তন
নবপ্রবর্তনের উদ্দেশ্য
- “নবপ্রবর্তন” হলো এমন এক চুক্তি যেখানে মূল ঋণগ্রহীতার বাধ্যবাধকতা অবসানের লক্ষ্যে বাধ্যবাধকতা সংক্রান্ত জরুরি উপাদানগুলো সংশোধন করা হয়।
· যেমন, ঋণদাতা যদি মনে করেন ঋণগ্রহীতা ঋণ পরিশোধে অপারগ হয়ে পড়েছে, তাহলে নবপ্রবর্তন-এর মাধ্যমে ঋণদাতা মূল চুক্তিতে ঋণগ্রহীতার পরিবর্তে তৃতীয় কোন পক্ষকে অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ জানাতে পারেন। নবপ্রবর্তন-এর মাধ্যমে মূল চুক্তির ঋণদাতাকেও তৃতীয় কোন পক্ষের দ্বারা পরিবর্তন করা যায়।
নবপ্রবর্তন-এর আবশ্যকতা
- এখানে একটি ঋণের অবসান ঘটবে।
- নবপ্রবর্তন থেকে একটি নতুন ঋণ বাধ্যবাধকতার সৃষ্টি হবে।
· কোন নবপ্রবর্তন থেকে যদি নতুন ঋণ বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি না হয় বা অবৈধ হবে বিবেচনা করে তা এড়িয়ে যাওয়া হয় অথবা এমন কোন পরিস্থিতির উদ্ভব হয় যার ব্যাপারে পক্ষগুলো অবহিত নয়, তাহলে মূল ঋণ বাধ্যবাধকতার অবসান ঘটবে না। (দেওয়ানি আইনের ধারা 504)
- নবপ্রবর্তন-এর মাধ্যমে ঋণগ্রহীতা, ঋণদাতা বা বাধ্যবাধকতার বিস্তারিত পরিবর্তন করা যাবে।
· নবপ্রবর্তন-এর মাধমে ঋণগ্রহীতা পরিবর্তন করা হলে ঋণদাতা ও নতুন ঋণগ্রহীতার মধ্যে চুক্তিটি কার্যকর হবে। তবে মূল ঋণগ্রহীতার ইচ্ছার বিরুদ্ধে এটা কার্যকর হবে না। (দেওয়ানি আইনের ধারা 501)
· নির্দিষ্ট দিনের উল্লেখ করে কোন প্রত্যায়নকৃত দলিলের মাধ্যমে করা না হলে নবপ্রবর্তন-এ কোন তৃতীয় পক্ষের বিপরীতে ঋণদাতা’র পরিবর্তন ঘটানো যাবে না। (দেওয়ানি আইনের ধারা 502)
নবপ্রবর্তন-এর কার্যকারিতা
- পক্ষগুলো যদি এমন কোন চুক্তিতে উপনীত হন যাতে বাধ্যবাধকতার জরুরি উপাদানগুলো পরিবর্তন করা হয়েছে, তাহলে নবপ্রবর্তন-এর মাধ্যমে ওই বাধ্যবাধকতাগুলো অবসান ঘটবে। (দেওয়ানি আইনের ধারা 500)
নিষ্কৃতি
নিষ্কৃতি কার্যকরের জন্য আবশ্যকতা
- কোন ঋণদাতা যদি ঋণগ্রহীতাকে তার ঋণ বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্তি দিতে ইচ্ছুক হন তাহলে ওই বাধ্যবাধকতার অবসান ঘটবে। তবে, যৌক্তিক স্বার্থ রয়েছে এমন কোন তৃতীয় পক্ষের বিপক্ষে এই নিস্কৃতি দেয়া যাবে না। (দেওয়ানি আইনের ধারা 506)
· উদাহরণস্বরূপ, কোন ঋণগ্রহীতা ভোক্তা অর্থঋণ চুক্তির আওতায় একজন ঋণদাতার কাছ থেকে 1,000,000 কেআরডব্লিউ ঋণ গ্রহণ করলো, কিন্তু ঋণদাতা যদি ঋণগ্রহীতা আর্থিক সঙ্কটে ভুগছে বলে মনে করেন এবং ঋণদাতাকে তার বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্তি দিতে ইচ্ছা পোষণ করেন, তাহলে ওই বাধ্যবাধকতার অবসান ঘটবে।
একীভূতকরণ
একীভূতকরণের আশ্যকতা ও কার্যকারিতা
- কোন দাবি এবং সংশ্লিষ্ট বাধ্যবাধকতা যদি একজন এবং একই ব্যক্তির ওপর বর্তায় তাহলে ওই দাবির সমাপ্তি ঘটবে। কিন্তু ওই দাবি যদি তৃতীয় কোন ব্যক্তির অধিকারের সঙ্গে যুক্ত থাকে তাহলে তা প্রযোজ্য হবে না। (দেওয়ানি আইনের ধারা 507)
· উদাহরণস্বরূপ, কোন স্ত্রী যদি তার স্বামী থেকে 10,000,000 কেআরডব্লিউ ধার করেন, এরপর স্বামী মারা যান এবং স্ত্রী তার উত্তরাধিকারী হন, তাহলে তার স্ত্রীর ওই 10,000,000 কেআরডব্লিউ ঋণ সংশ্লিষ্ট বাধ্যবাধকতার অবসান ঘটবে। কারণ, স্বামীর যে এস্টেট ওই ঋণ আদায় করতো তার উত্তরাধিকারী এখন স্ত্রী।