BANGLADESH

ঋণচুক্তি
জামিনদারি চুক্তি
উদ্দেশ্য
- কোন “জামিনদারি চুক্তি”র মানে হলো ঋণদাতা ও একজন জামিনদারের মধ্যে অন্য কোন ব্যক্তির নেয়া ঋণ পরিশোধের নিশ্চয়তা বিধানের চুক্তি।
- “জামিনদারের বাধ্যবাধকতা”র মানে হলো কোন জামিনদারি চুক্তি’র ফলে জামিনদারের জন্য সৃষ্ট বাধ্যবাধকতা। এই চুক্তি অনুযায়ী মূল ঋণগ্রহীতা খেলাপিতে পরিণত হলে ওই ঋণ পরিশোধে জামিনদার বাধ্য থাকেন। (দেওয়ানি আইনের ধারা 428-(1))
জামানতের ব্যাপ্তি
- ঋণদাতা ও জামিনদার জমানতের ব্যাপ্তির বিষয়ে (অর্থাৎ, জামিনদারের বাধ্যবাধকতা) একমত হতে পারেন। তবে, কোন বিপরীতধর্মী ইচ্ছা ব্যক্ত করা না হলে, জামিনদারের বাধ্যবাধকতার মধ্যে থাকবে ঋণের মূল অংক, মূল অংকের ওপর সৃষ্ট সুদ, ঋণদাতার কোন ক্ষতি হলে তার ক্ষতিপূরণ এবং ঋণের মূল অংকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যয়। (দেওয়ানি আইনের ধারা 429-(1))
· জামিনদারের বাধ্যবাধকতা প্রতিপালন নিশ্চিত করার জন্য ঋণদাতা ও জামিনদার বিলম্বজনিত এবং জামিনদারের বাধ্যবাধকতা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ক্ষতির জন্য ক্ষতিপূরণের ব্যাপারেও একমত হতে পারেন (দেওয়ানি আইনের ধারা 429-(2))
জামিনদারের আবশ্যকতা
- কোন ঋণগ্রহীতা যদি একজন জামিনদান নিয়ে আসে, ওই জামিনদারকে এমন কোন ব্যক্তি হতে হবে যার ওই ঋণ পরিশোধ করার মতো পূর্ণ সামর্থ্য ও আর্থিক স্বচ্ছলতা রয়েছে। (দেওয়ানি আইনের ধারা 431-(1))
- জামিনদার যদি ঋণ পরিশোধে অসমর্র্থ হয়ে পড়েন, তাহলে ঋণদাতা ওই জামিনদার পরিবর্তনের অনুরোধ জানাতে পারবেন। (দেওয়ানি আইনের ধারা 431-(2))
- অন্যান্য যৌক্তিক জমানত পাওয়া গেলে তার পরিবর্ততে ঋণগ্রহীতাকে একজন জামিনদার হাজির করার দায় থেকে অব্যাহতি দেয়া যেতে পারে। (দেওয়ানি আইনের ধারা 432)
মূল ঋণগ্রাহীতার দায় পরিবর্তন কার্যকর হওয়া
- ঘটনা যাই হোক না কেন, মূল ঋণগ্রহীতাকে খুঁজে পাওয়া না গেলে জামিনদারের বাধ্যবাধকতা কার্যকর হবে।
- তৃতীয় কোন পক্ষকে যদি ঋণ দেয়া হয়, সেক্ষেত্রে জামিনদারের বিরুদ্ধে ঋণদাতার অধিকার ওই তৃতীয় পক্ষের ওপরও বর্তাবে।
- মূল ঋণগ্রহণকারীকে পরিশোধ দাবির জন্য যে সময়সীমা বেধে দেয়া হয়েছে জামিনদারের ওপরও তা প্রযোজ্য এবং কার্যকর হবে। (দেওয়ানি আিইনের ধারা 440)
ইনডেমনিটি পাওয়ার ব্যাপারে জামিনদারের অধিকার
- কোন জামিনদার যদি তার বাধ্যবাধকতা প্রতিপালন করেন তাহলে তিনি মূল ঋণগ্রহীতার বিপরীতে তার ‘ইনডেমনিটি পাওয়ার অধিকার’ প্রয়োগ করতে পারেন। (নোট: ‘ইনডেমনিটি পাওয়ার অধিকার’ মানে হলো এমন ব্যক্তিদের অধিকার দাবি যারা ঋণগ্রহীতার পক্ষে ঋণ পরিশোধ করছেন।)
- মূল ঋণ গ্রহীতার অনুরোধে জামিনদার হয়েছেন এমন কোন জামিনদার (এরপর থেকে ‘জিম্মাদার’ হিসেবে উল্লেখ করা হবে) যদি খেলাপি হওয়া ছাড়াই নিজ ব্যয়ে ঋণ পরিশোধ করতে থাকেন, তাহলে এ ধরনের জামিনদার ইমডেমনিটি পাওয়ার অধিকার রাখেন। (দেওয়ানি আইনের ধারা 441-(1)
· মূল ঋণের একটি অংশ যদি পরিশোধিত হয়ে যায়, তাহলে ‘জিম্মাদার’ ওই পর্যন্ত ইনডেমনিটি পাওয়ার অধিকার রাখেন।
· যেদিন থেকে মূল ঋণ পরিশোধিত হয়ে যাবে এবং এরপর সৃষ্ট অনিবার্য খরচসহ অন্যান্য ক্ষতির কারণে জমা হওয়া সংবিধিবদ্ধ সুদের ক্ষেত্রেও জিম্মাদারের ওপর ইনেডেমনিটি পাওয়ার অধিকার বর্তাবে। (দেওয়ানি আইনের ধারা 441-(2) ও 425-(2)
· নীতিগতভাবে, নিজ ব্যয়ে ঋণের মূল্য অংক পরিশোধ করার পর একজন জিম্মাদার তার ইনডেমনিটি পাওয়ার অধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন (দেওয়ানি আইনের ধারা 441-(1))
· দায়মুক্তির ব্যাপারে মূল ঋণগ্রহীতাকে যদি কোন আগাম/ফলোআপ নোটিশ দেয়া না হয়, তাহলে জামিনদারের ইনডেমনিটি পাওয়ার অধিকার প্রয়োগের অধিকার সীমিত হতে পারে।
- এমন কোন ক্ষেত্র যেখানে মূল ঋণগ্রহীতার অনুরোধ ছাড়াই কেউ জামিনদার হয়েছে, তার নিজের খরচে ঋণ পরিশোধ বা অন্যান্য বাধ্যবাধকতা প্রতিপালন করেছে, ঋণের মূল অংক পরিশোধ করেছে, তাহলে মূল ঋণগ্রহীতার বিপরীতে ওই জামিনদার ঠিক ওইভাবে ইনডেমনিটি পাওয়ার অধিকারী হবেন যেন পরিশোধকালে মূল ঋণগ্রহীতাই তা পরিশোধ করেছেন। (দেওয়ানি আইনের ধারা 444-(1))
- এমন কোন ক্ষেত্র যেখানে মূল ঋণগ্রহীতার অনুমোদন ছাড়াই কেউ জামিনদার হয়েছে, তার নিজের খরচে ঋণ পরিশোধ বা অন্যান্য বাধ্যবাধকতা প্রতিপালন করেছে, ঋণের মূল অংক পরিশোধ করেছে, তাহলে মূল ঋণগ্রহীতার বিপরীতে ওই জামিনদার ঠিক ওইভাবে ইনডেমনিটি পাওয়ার অধিকারী হবেন যেন মূল ঋণগ্রহীতাইে এখনো পরিশোধ করে চলেছেন। (দেওয়ানি আইনের ধারা 444-(2))
জামিদারি চুক্তি
- কোন ভোক্তা অর্থঋণ চুক্তি সম্পাদনের পাশাপাশি একই সঙ্গে একটি জামিদারি চুক্তি করা যায়। তবে জামিনদার পরবর্তী সময়ে অর্থঋণ চুক্তি থেকে আলাদাভাবে চুক্তিবদ্ধ হতে পারেন।