বাসস্থান লিজ চুক্তি অবসানের কারণ
লিজের মেয়াদ উত্তীর্ণ
- লিজের মেয়াদ যদি নির্ধারণ করা থাকে, তাহলে লিজের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলে লিজের অবসান ঘটবে।
- যখন চুক্তি বাতিলের কোন কারণ ঘটে যেমন: লিজের মেয়াদ যদি নির্ধারিত থাকে, যদি বাতিলের অধিকার সংরক্ষণের ব্যাপারে বিশেষ কোন শর্ত থাকে, লিজগ্রহীতা যদি দেউলিয়া ঘোষিত হন, ইত্যাদি, তাহলে চুক্তি মেয়াদের মধ্যে চুক্তি বাতিলের একটি নোটিশ প্রদানের মাধ্যমে লিজ চুক্তি বাতিল করা যাবে (দেওয়ানি আইনের ধারা 636 ও 637)।
- লিজদাতা যদি নবায়ন প্রত্যাখ্যান করে লিজগ্রহীতাকে কোন নোটিশ প্রদান করে থাকেন, অথবা লিজের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া 6 মাস থেকে 2 মাস আগে, লিজগ্রহীতাকে জানিয়ে থাকেন যে শর্তের কোনরকম পরিবর্তন ছাড়া তিনি চুক্তি নবায়ন করবেন না, তাহলে লিজের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর লিজ চুক্তির অবসান ঘটবে (বাসস্থান লিজ সুরক্ষা আইনের ধারা 6(1))।
চুক্তি বাতিলের নোটিশ
- কোন লিজ চুক্তি যদি পরোক্ষভাবে নবায়ন হয়ে থাকে, লিজগ্রহীতা যেকোন সময় চুক্তি বাতিল করতে পারেন। লিজগ্রহীতা যদি চুক্তি বাতিলের নোটিশ দিয়ে থাকেন, তাহলে লিজদাতা যেদিন ওই নোটিশ গ্রহণ করবেন সেই দিন থেকে 3 মাস পর অবসান কার্যকর হবে (বাসস্থান লিজ সুরক্ষা আইনের ধারা 4(1) ও 6-2))।
- কোন লিজ চুক্তি সম্পাদনের সময় যদি লিজগ্রহীতা বা লিজদাতা বাতিলের অধিকার সংরক্ষণ করে কোন বিশেষ শর্ত যুক্ত করেন, তিনি অনিবার্য কারণবশত চুক্তির মেয়াদকালে লিজ চুক্তি বাতিল করতে পারেন, তদসত্ত্বেও, আসল কথা হচ্ছে লিজে ভাড়ার একটি নির্ধারিত মেয়াদ থাকে। সেক্ষেত্রে, লিজদাতা লিজ বাতিলের নোটিশ প্রাপ্তির দিন থেকে 1 মাস পর লিজ বাতিল হয়ে যাবে (দেওয়ানি আইনের ধারা 635 ও 636)।
লিজগ্রহীতার দেউলিয়াত্ব
- লিজগ্রহীতা যদি দেউলিয়া বলে ঘোষিত হন, তাহলে লিজদাতা বা দেউলিয়া ট্রাস্টি বাকি অনুত্তীর্ণ মেয়াদ সম্পর্কিত ভবিষ্যতের জন্য লিজ বাতিলের নোটিশ দিতে পারেন, আসল কথা হচ্ছে লিজে ভাড়ার একটি নির্ধারিত মেয়াদ থাকে। সেক্ষেত্রে, লিজগ্রহীতা বাতিলের নোটিশ পাওয়ার দিন থেকে 6 মাস পর লিজের অবসান ঘটবে (দেওয়ানি আইনের ধারা 637(1))।
- সেক্ষেত্রে, কোন পক্ষই বাকি অনুত্তীর্ণ মেয়াদ সম্পর্কিত ভবিষ্যতের জন্য লিজ বাতিলের কারণে সৃষ্ট ক্ষতি দাবি করতে পারবে না (দেওয়ানি আইনের ধারা 637(2))।
অবিলম্বে বাতিল
- বাতিলের কারণ যদি নিম্নলিখিত যেকোন একটির আওতায় পড়ে, চুক্তির মেয়াদাকলে লিজ চুক্তি বাতিল করা যেতে পারে, তদসত্ত্বেও, আসল কথা হচ্ছে লিজে ভাড়ার একটি নির্ধারিত মেয়াদ থাকে। সেক্ষেত্রে, একপক্ষের বাতিলের ইচ্ছার ঘোষণা যখন অন্যপক্ষের কাছে পৌছে তখন থেকে অবসান কার্যকর হবে।
· যেসব ঘটনায় লিজগ্রহীতা কোন লিজ চুক্তি বাতিল করতে পারেন:
√ লিজদাতা যদি লিজগ্রহীতার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন সংরক্ষণমূরক কাজ করেন এবং এর ফলে লিজগ্রহীতা যে উদ্দেশ্যে লিজ নিয়েছেন তা অর্জনে অসমর্থ হন (দেওয়ানি আইনের ধারা 625)।
√ লিজগ্রহীতার দোষ ছাড়া নষ্ট হওয়া বা অন্যকোন কারণে লিজ নেয়া বাসস্থান যদি আংশিকভাবে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে, অথবা সেখান থেকে সুবিধা লাভ অসম্ভব হয়, এবং লিজগ্রহীতা যে উদ্দেশ্যে লিজ নিয়েছিলেন বাসস্থানের বাকি অংশ যদি সেই উদ্দেশ্য পূরণে পর্যাপ্ত না হয় (দেওয়ানি আইনের ধারা 627);
√ লিজদাতার মর্যাদা যদি এসাইন করা হয় (2 সেপ্টেম্বর 2002 তারিখে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত, ডিটারমিনেশন নং জা 2001Da64615)।
· এমন ঘটনাবলী যেখানে লিজদাতা লিজ চুক্তি বাতিল করতে পারেন:
√ লিজদাতার সম্মতি না নিয়ে লিজদাতা যদি তার লিজ অধিকার অন্য কাউকে দেন বা লিজ নেয়া বাসস্থান সাবলিজ দেন (দেওয়ানি আইনের ধারা 629(2));
√ লিজগ্রহীতা যদি দুই কিস্তি পর্যন্ত ভাড়া পরিশোধে ব্যর্থ হন (দেওয়ানি আইনের ধারা 640 এবং বাসস্থান লিজ সুরক্ষা আইনের ধারা 6(3));
√ লিজগ্রহীতা যদি চুক্তিতে বর্ণিত উপায়ে অথবা বাসস্থানের প্রকৃতি অনুযায়ী লিজ নেয়া বাসস্থানটি ব্যবহার তা থেকে সবিধা গ্রহণ না করেন (দেওয়ানি আইনের ধারা 654-এর আওতায় একই আইনে ধারা 610(1)-এর প্রয়োগ)।
√ লিজগ্রহীতা যদি লিজ চুক্তির আওতায় বাধ্যবাধকতা গুরুতরভাবে লঙ্ঘন করেন।
লিজ অবসানের প্রভাব
লিজ সম্পর্ক প্রশমন ও ক্ষয়ক্ষতির জন্য ক্ষতিপূরণ
- লিজদাতা বা লিজগ্রহীতা যেকেউ লিজ চুক্তি বাতিল করুন না কেন, ভবিষ্যতের লিজের সম্পর্ক তার কার্যকারিতা হারাবে (দেওয়ানি আইনের ধারা 550)।
- কোন এক পক্ষ যদি লিজ চুক্তি বাতিল করেন এবং সেখানে অন্য পক্ষের অবহেলা থাকে, তাহলে ওই পক্ষ ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারেন (দেওয়ানি আইনের ধারা 551)।
লিজ নেয়া বাসস্থান ফেরত ও লিজ নিরাপত্তা জামানত ফেরত দান
- লিজের অবসান ঘটলে, লিজগ্রহীতা লিজ নেয়া বাসস্থান, ইত্যাদি ফেরত দিতে বাধ্য এবং লিজ চুক্তির শর্তাবলী অনুযায়ী লিজদাতা লিজের নিরাপত্তা জামানত ফেরত দানে বাধ্য থাকবেন (দেওয়ানি আইনের ধারা 536)।
লিজহোল্ড নিবন্ধন আদেশের জন্য আবেদনের অধিকার অর্জন
- লিজের অবসানের পর কোন জামানতের অর্থ যদি ফেরত দেয়া না হয়, একজন লিজগ্রহীতা লিজহোল্ড নিবন্ধন আদেশের জন্য আবেদন দাখিলের অধিকার অর্জন করবেন। লিজহোল্ড নিবন্ধন আদেশ অনুযায়ী লিজগ্রহীতা লিজহোল্ড নিবন্ধন সম্পন্ন করার পর, তার বিরোধিতা করার ক্ষমতা এবং অগ্রাধিকারমূলক পরিশোধ অধিকার লাভ বা বহাল হবে (বাসস্থান লিজ সুরক্ষা আইনের ধারা 3-3(5))।
দরকারী ব্যয় পরিশোধের দাবি এবং আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম ক্রয়ের দাবি
- শুধুমাত্র সুনির্দিষ্ট ঘটনায়, লিজদাতার কাছে লিজগ্রহীতা দরকারি ব্যয়ের জন্য দাবি জানাতে পারেন বা লিজদাতাকে আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম কিনে নিতে দাবি জানাতে পারেন (দেওয়ানি আইনের ধারা 626(2) ও 646)।
· লিজগ্রহীতা কর্তৃক ভাড়া বাকি রাখা, ইত্যাদির মতো অপূর্ণ বাধ্যবাধকতার জন্য যদি লিজচুক্তি বাতিল হয়ে যায়, লিজগ্রহীতা আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম কিনে নিতে লিজদাতার কাছে দাবি জানাতে পারবেন না (23 জানুয়ারি 1990 তারিখে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত, মামলা নং 88ডাকা 7245 ও 88ডাকা 7252)।